Sat, Jan 9, 2021 11:23 PM
হাসান আলী: আপনি কেন দান করছেন? মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে? আপনার মন এত নরম কেন? মানুষের কাছে আপনার মহত্ত্ব তুলে ধরতে চান? নাকি অপকর্ম ঢাকতে? দান করে কি অর্জন করতে চান? পুন্য যশ খ্যাতি মান সম্মান? মানুষ কেন জানে আপনি দানশীল? কেন প্রচার পাচ্ছে আপনার দানশীলতার খবর? মুচকি হেসে ইনিয়ে বিনিয়ে দানের খবর জানিয়ে দিচ্ছেন কেন?
দানগ্রহীতা যদি প্রশ্ন তোলে - আপনি কেমন করে সম্পদের মালিক হলেন? অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা আর সংগ্রাম- লড়াইয়ের ফলে সম্পদের মালিক হয়েছেন, এই গল্প তো হর হামেশাই শুনছি!! বংশানুক্রমিক ভাবে ধনী? আপনার পুর্বপুরুষের বিদেহী আত্মাকে সম্মান জানাই।
সম্পদের মালিকরা আশা করে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম কয়েক হাজার বছর ধরে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে!! এমনটা আশা করা অন্যায় তো কিছু না!
আপনি দিন রাত পরিশ্রম করে সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছেন। কমবেশি সবাই এ খবর রাখে তবে বিশ্বাস করে কিনা সন্দেহ আছে! কেন বিশ্বাস করবে? সে তো দিন-রাত পরিশ্রম করে হাড়ভাঙ্গা খাটুনির বিনিময়ে দু'বেলা খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে যায়!
মানুষ বুঝে গেছে শুধু পরিশ্রমে ধন আনে না। ধন আনতে মন লাগে মানে বুদ্ধি লাগে! সেই বুদ্ধি কি? মানুষের পকেটের টাকা কৌশলে নিজের পকেটে নেয়া! যেমন? চঞ্চল টাকা আঁচলে রেখোনা। কোথায় রাখবো?আমার কাছে রাখুন! লাভ পাবেন,নিরাপদে থাকবে!
বেকার থাকবেন না?কোথায় থাকবো? আরে কাজে লেগে যান! কোন কাজেই ছোট না। ছোট ছোট কাজ করেই বড় হতে হয়। কাজ মানে শ্রম দেয়া। শ্রম দিলে টাকা পাবেন। টাকা পেলে খাবার পাবেন,জীবন বাঁচবে। জীবন বাঁচলে কাজে ফিরবেন!
মানুষ কি এখন চাকরি খুঁজে? উদ্যোক্তা হয়ে হাজার হাজার মানুষের কর্ম সংস্হান করবেন! এখন কি করতে হবে? বুদ্ধি আমরা দিব। ব্যাংক ঋন দিবে।সরকার ভ্যাট ট্যাক্স নিবে। আপনি পাজারো প্রাডোতে অফিস করবেন! স্বপ্ন টা তো দারুণ!!
এখন শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা কৃষিতে মনোযোগ বাড়িয়েছে। এটাই তো স্বাভাবিক! কৃষি আমাদের মুল শক্তি! সরকার ভূর্তকী দিচ্ছে, কৃষি উৎপাদন বাড়ছে।সতের কোটি মানুষ খেয়ে পরে বাঁচছে। উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার অভিযোগ আছে। ফসলের দাম বাড়লে হৈচৈ, টকশো,কলাম,রিপোর্টে তুলকালাম!চালকল মালিকরা ভবিষ্যতে বড় ঝুঁকি এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমানে মজুতের সুযোগ পেয়েছে।
সুস্বাস্থ্য রক্ষায় পকেটে খালি করে দিতে হয়! কেন সুস্বাস্থ্য? কাজ করতে হবে। কাজ করলে টাকা যোগাড় হবে।একবার শরীর খাটিয়ে আয় আবার শরীর রক্ষায় ব্যয়!!!
মানুষ খাঁটবে কলে-কারখানায়, কৃষিতে, ব্যবসা-বাণিজ্যে।
কিছু মানুষ বুদ্ধি খাটিয়ে পয়সা কামাবে। তারপর দানশীল হবার নাটকে অংশ নিবে! একদল মানুষ বাদ্য বাজিয়ে নেচে-কুঁদে গুন কীর্তন করবে!!
সম্পদ ব্যক্তি শুধু জীবদ্দশায় ভোগ করতে পারবে এমন ব্যবস্থা থাকলে দানশীল হবার কঠিন কাজটা অনেকেরই করতে হতো না! দানশীল হবার কঠিন কাজ থেকে মুক্তির আর কি উপায় আছে?