Mon, Jan 4, 2021 12:31 AM
জিয়া হায়দার: সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরী করা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি অয়েস্ট্রাজেনিকা করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার। এর অর্থ হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি বাধা নিষেধের জন্য অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে ন। এর ফলে বাংলাদেশ সহ অনেক দেশের জনগণের কাছে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন পৌঁছুতে অন্তত ৪ থেকে ৫ মাস দেরি হবে, যা শুধু দুঃখজনকই নয় রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের উপরেও বড়ো ধরণের চপেটাঘাত।
বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশ অথবা অন্য যেকোনো দেশ অরক্ষিত থাকলে মহামারীর প্রভাব অন্য সকল দেশের উপরই পরবে। প্রথম ধাক্কাটা সন্দেহাতীতভাবে নিকট প্রতিবেশীর উপরেই আসবে| সুতরাং ভারত সরকারের সিদ্ধান্তটি যে আত্মঘাতী তাতেও সন্দেহের অবকাশ নাই।
আমি আরো এক পা এগিয়ে গিয়ে বলতে চাই, ভারত সরকারের ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত অমানবিক এবং অনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সাথে সাংঘর্ষিক। এই অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রনে যে অনিশ্চয়তা নেমে আসলো তার দায় দায়িত্ব ভারতের বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে, এবং সেটা ইতিহাসের পাতাতেও একটি কালো সিধান্ত হিসাবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
আমার বিশ্বাস ভারতের অগুনিত চিন্তাশীল মানুষ ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধের এই জনস্বাস্থ্য বিরোধী সিদ্ধান্তের জন্য উদ্বিগ্ন এবং লজ্জিত। ভারত এবং বিশ্বের সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভারত সরকার জনস্বাস্থ্য বিরোধী এই কালো সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবেন সেই আশাই রাখছি।
লেখক: জিয়া হায়দার, বিশ্বব্যাংকের উর্ধ্বতন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ